আজ ০৫ ই ফেব্রুয়ারি ২০৩০ সাল, রাত ১টা বাজে ঘুমাতে যাবো... ঠিক সেই মুহুর্তেই বাংলাদেশি নাম্বার থেকে ফোন। আমিঃ হ্যালো আসসালামুয়ালাইকুম। কে? হ্যালো তানু আমি.... আমি তোর কাশেম ভাই। কোন কাশেম ভাই??? আরে বেডা চিনস না? না মিয়া কে? কোন কাশেম ভাই? আরে রিক্সা আলা কাশেম ভাই। ওরেএএএএএ ভাই..... আপনি??? কেমন আছেন???? এইযে শুরু হইলো আলাপ পাক্কা ৩ ঘন্টা ফোনে কথা হইছে। কাশেম ভাইয়ের সাথে পরিচয়ের পর একদিন উনার ফোনটা খুজে পাচ্ছিলোনা তো আমার মোবাইল দিয়ে কল দিতে গিয়ে দেখলো উনার নাম্বার রিক্সা ওয়ালা কাশেম ভাই দিয়ে সেভ করা। সেই থেকে উনি জানতো আমার কাছে উনার পরিচয় রিক্সা ওয়ালা কাশেম ভাই নামেই। মাইন্ডও করতোনা। কাশেম ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় হয় প্রায় ১০ বছর আগে মানে ২০১৯ এর দিকে। একদিন উনি এরেস্ট অবস্থায় বাসে করে যাচ্ছিলো। উনাকে আসামী হিসেবে লোকাল থানা থেকে চালান করে দিয়েছিলো পুলিশ। তো বাসের মধ্যে আমার কাছে পানি দেখে পানি খাইতে চাইলো। অনেক খুদার্ত দেখে আমি আমার সাথে থাকা একটা বিস্কুটের প্যাকেট দিলাম খাইতে। তার ৩মাস পর আবার উনার সাথে বাসে দেখা। জিজ্ঞাস করলাম ওইদিন কি হইছিলো?
বললো, ভাই জুয়া খেলছিলাম। বউয়ে পুলিশ দিয়া ধরাইয়া দিছে। আজকেই ছাড়া পাইলাম। জিজ্ঞাস করলাম আর খেলবেন??? বললো ভাই জুয়া খেলার মত আর কোন সম্পদই আমার নাই। যেই রিক্সাটা চালাইতাম ওইটা বেইচ্চা আরো কিছু টাকা ধার কইরা আমার মায় আমার জামিন করাইছে। অনেক্ষন কথা হইলো এবার আমার নামতে হবে তাই বললাম যাই আর জুয়া খেইললেন না। উনি আমার মোবাইল নাম্বারটা চাইলো, দিয়ে দিলাম।৩/৪ দিন পর ফোন দিয়া পরিচয় দিলো। পরে কথা বললাম, বললো ভাই আমারে যেই কোন একটা কাম জোগাড় কইরা দেন। আমি সব কাম করতে পারুম। বউ আর সংসার নিয়া খুব জালায় আছি। ২ মাস হয়ে গেলো আমি কোন ব্যবস্থাই করতে পারি নাই উনার জন্য। হঠাত একটা প্ল্যান আসলো মাথায়। পরে আবার ভাবলাম উনাকে দিয়া সম্ভব না। কথায় কথায় উনার সাথে বলেই ফেললাম প্ল্যানটস। উনি খুব আখাংকার সাথে করতে ইচ্ছা প্রকাশ করলো।
কাশেম ভাইয়ের এলাকায় গেলাম। উনার এলাকায় বিশাল একটা বাজার। বাজারের নাম ভদ্র বাজার। গিয়ে দেখলাম উনার সার্ভিসটা মনে হয় ভালোই চলবে। আমি আমার নিজের খরচে কয়েকশ লিফলেট ছাপিয়ে দেই। কাশেম ভাই ধার করে একটা সাইকেল কিনে নেয়। কাশেভ ভাইর সার্ভিসটা ছিলো যাস্ট ডেলিভারি। অর্থাৎ কারো এখানকার জিনিস ওখানে নিয়ে বা দিয়ে আসা। কারো ৫ লিটার তেল বা চিনি লাগবে, কারো কোন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস লাগবে এগুলো এনে দেয়া এমন টাইপের। লিফলেট গুলা দেয়ার সময় অনেক মানুষই অনেক কথা বলে চেতাইছিলো। কাশেম ভাইর ফোনে প্রথম দিন ৬ টা কল আসছিলো। আর ইনকাম হয়েছিলো ১৫০ টাকার মত। প্রতিদিন তার কল আর ইনকামের পরিমান বাড়তে থাকলো।
১ মাস পর দিনশেষে কাশেম ভাইয়ের ফোন। তানু ভাই দুঃখিত আমি ব্যাস্ততার জন্য আপনারে কল দিতে পারি নাই। আমিঃ আপনার সার্ভিস কেমন চলছে?
কাশেম ভাইঃ ভাই আলহামদুলিল্লাহ আজকে ১২০০ টাকা ইনকাম করছি। প্রতিদিনই কাশেম ভাইর ইনকাম বাড়তে থাকলো। কাশেম ভাই ২ মাস পর তার সাথে দৈনিক ৫০০ টাকা বেতনে আরো ২ জনকে নিয়ে নিলো। হঠাত একদিন আমার এলাকায় এসে একটা পাঞ্জাবিও গিফট করে গেলো। আস্তে আস্তে উনি শর্ট টাইম ডেলিভারি এজেন্সির মত খুলে বসললো। উনার সার্ভিসটি এলাকা ছাড়িয়ে এখন পুরো জেলা শহরেও ছড়িয়ে পড়লো। আর পিছে তাকাতে হয়নি কাশেম ভাইকে। আমি বিদেশ আসার এক বছর আগে কাশেম ভাইকে ফেইসবুক পেইজ খুলে দিয়েছিলাম
ফেইসবুক পেইজ থেকে থেকে কাশেম ভাই শুরু করলো নতুন বিজিনেস টাটকা সবজি আর মাছের। সারাদেশে দেশীয় বিভিন্ন সবজি আর মাছ সাপ্লাই দিত। কাশেম ভাইর সাথে আজকের আগে আর কথা হয়নি। জানতে পারলাম উনার কোম্পানিতে বর্তমানে প্রায় ৫০০+ কর্মি আছে। কাশেম ভাউর এজেন্সি নাকি বর্তমানে বাংলাদেশে একটা ব্র্যান্ড হয়ে দাড়িয়েছে। কাশেম ভাইয়ের এখন কয়েকটা বাড়িও আছে। পাশা পাশি আছে অনেক রকমের ব্যবসা। ৮পাস কাশেম ভাই পরে উন্মুক্ত থেকে এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি পাশ করে ডিগ্রিও কমপ্লিট করছে। উনার এখন ৩টা বাচ্চা।
কাশেম ভাইঃ আছি ভাই সুখে শান্তিতে আছি। আগামি মাসে হজ করতে যামু। আমি চাইতাছি তুমিও আমার সাথে চলো। বাকি কথা কালকে বলবো। আজকে অনেক রাত হয়ে গেছে রাখলাম।
মোদ্দাকথাঃ
বর্তমান যুগে বেকারত্ব আকামে থাকার অজুহাত মাত্র।
হালাল পথে আয় রোজগার শুরু করুন ইনশা আল্লাহ সফল হবেন।
বর্তমানে আপনি এমন স্মার্ট ব্যবসা ভাবতেই পারেন। অনেকেই এগুলো নিয়ে তিরষ্কার করবে। ওদেরকে দেখার প্রয়োজন নেই এগিয়ে চলুন।
এই দুনিয়ায় প্রতিদিন অনেক কাশেম ভাইয়ের সফলতার গল্প তৈরী হচ্ছে। আর আমরা আকাউম্মারা দোকানে দোকানে বসে আলোচনা সমালোচবার কির্তন করছি।
অনেকে আবার এমন টাইপের বিজনেস বা সার্ভিস দিতে আন ইজি ফিল হয়... আত্নসম্মানে লাগে।
আজকে খবরের কাগজে দেখলাম ২বারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান উবারের হোন্ডা চালক। এছাড়াও পরিচিত অনেক কোটিপতির ছেলেরাও ঢাকার শহরে এখন এমন টাইপের সার্ভিস দেয়।
বললো, ভাই জুয়া খেলছিলাম। বউয়ে পুলিশ দিয়া ধরাইয়া দিছে। আজকেই ছাড়া পাইলাম। জিজ্ঞাস করলাম আর খেলবেন??? বললো ভাই জুয়া খেলার মত আর কোন সম্পদই আমার নাই। যেই রিক্সাটা চালাইতাম ওইটা বেইচ্চা আরো কিছু টাকা ধার কইরা আমার মায় আমার জামিন করাইছে। অনেক্ষন কথা হইলো এবার আমার নামতে হবে তাই বললাম যাই আর জুয়া খেইললেন না। উনি আমার মোবাইল নাম্বারটা চাইলো, দিয়ে দিলাম।৩/৪ দিন পর ফোন দিয়া পরিচয় দিলো। পরে কথা বললাম, বললো ভাই আমারে যেই কোন একটা কাম জোগাড় কইরা দেন। আমি সব কাম করতে পারুম। বউ আর সংসার নিয়া খুব জালায় আছি। ২ মাস হয়ে গেলো আমি কোন ব্যবস্থাই করতে পারি নাই উনার জন্য। হঠাত একটা প্ল্যান আসলো মাথায়। পরে আবার ভাবলাম উনাকে দিয়া সম্ভব না। কথায় কথায় উনার সাথে বলেই ফেললাম প্ল্যানটস। উনি খুব আখাংকার সাথে করতে ইচ্ছা প্রকাশ করলো।
কাশেম ভাইয়ের এলাকায় গেলাম। উনার এলাকায় বিশাল একটা বাজার। বাজারের নাম ভদ্র বাজার। গিয়ে দেখলাম উনার সার্ভিসটা মনে হয় ভালোই চলবে। আমি আমার নিজের খরচে কয়েকশ লিফলেট ছাপিয়ে দেই। কাশেম ভাই ধার করে একটা সাইকেল কিনে নেয়। কাশেভ ভাইর সার্ভিসটা ছিলো যাস্ট ডেলিভারি। অর্থাৎ কারো এখানকার জিনিস ওখানে নিয়ে বা দিয়ে আসা। কারো ৫ লিটার তেল বা চিনি লাগবে, কারো কোন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস লাগবে এগুলো এনে দেয়া এমন টাইপের। লিফলেট গুলা দেয়ার সময় অনেক মানুষই অনেক কথা বলে চেতাইছিলো। কাশেম ভাইর ফোনে প্রথম দিন ৬ টা কল আসছিলো। আর ইনকাম হয়েছিলো ১৫০ টাকার মত। প্রতিদিন তার কল আর ইনকামের পরিমান বাড়তে থাকলো।
১ মাস পর দিনশেষে কাশেম ভাইয়ের ফোন। তানু ভাই দুঃখিত আমি ব্যাস্ততার জন্য আপনারে কল দিতে পারি নাই। আমিঃ আপনার সার্ভিস কেমন চলছে?
কাশেম ভাইঃ ভাই আলহামদুলিল্লাহ আজকে ১২০০ টাকা ইনকাম করছি। প্রতিদিনই কাশেম ভাইর ইনকাম বাড়তে থাকলো। কাশেম ভাই ২ মাস পর তার সাথে দৈনিক ৫০০ টাকা বেতনে আরো ২ জনকে নিয়ে নিলো। হঠাত একদিন আমার এলাকায় এসে একটা পাঞ্জাবিও গিফট করে গেলো। আস্তে আস্তে উনি শর্ট টাইম ডেলিভারি এজেন্সির মত খুলে বসললো। উনার সার্ভিসটি এলাকা ছাড়িয়ে এখন পুরো জেলা শহরেও ছড়িয়ে পড়লো। আর পিছে তাকাতে হয়নি কাশেম ভাইকে। আমি বিদেশ আসার এক বছর আগে কাশেম ভাইকে ফেইসবুক পেইজ খুলে দিয়েছিলাম
ফেইসবুক পেইজ থেকে থেকে কাশেম ভাই শুরু করলো নতুন বিজিনেস টাটকা সবজি আর মাছের। সারাদেশে দেশীয় বিভিন্ন সবজি আর মাছ সাপ্লাই দিত। কাশেম ভাইর সাথে আজকের আগে আর কথা হয়নি। জানতে পারলাম উনার কোম্পানিতে বর্তমানে প্রায় ৫০০+ কর্মি আছে। কাশেম ভাউর এজেন্সি নাকি বর্তমানে বাংলাদেশে একটা ব্র্যান্ড হয়ে দাড়িয়েছে। কাশেম ভাইয়ের এখন কয়েকটা বাড়িও আছে। পাশা পাশি আছে অনেক রকমের ব্যবসা। ৮পাস কাশেম ভাই পরে উন্মুক্ত থেকে এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি পাশ করে ডিগ্রিও কমপ্লিট করছে। উনার এখন ৩টা বাচ্চা।
কাশেম ভাইঃ আছি ভাই সুখে শান্তিতে আছি। আগামি মাসে হজ করতে যামু। আমি চাইতাছি তুমিও আমার সাথে চলো। বাকি কথা কালকে বলবো। আজকে অনেক রাত হয়ে গেছে রাখলাম।
মোদ্দাকথাঃ
বর্তমান যুগে বেকারত্ব আকামে থাকার অজুহাত মাত্র।
হালাল পথে আয় রোজগার শুরু করুন ইনশা আল্লাহ সফল হবেন।
বর্তমানে আপনি এমন স্মার্ট ব্যবসা ভাবতেই পারেন। অনেকেই এগুলো নিয়ে তিরষ্কার করবে। ওদেরকে দেখার প্রয়োজন নেই এগিয়ে চলুন।
এই দুনিয়ায় প্রতিদিন অনেক কাশেম ভাইয়ের সফলতার গল্প তৈরী হচ্ছে। আর আমরা আকাউম্মারা দোকানে দোকানে বসে আলোচনা সমালোচবার কির্তন করছি।
অনেকে আবার এমন টাইপের বিজনেস বা সার্ভিস দিতে আন ইজি ফিল হয়... আত্নসম্মানে লাগে।
আজকে খবরের কাগজে দেখলাম ২বারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান উবারের হোন্ডা চালক। এছাড়াও পরিচিত অনেক কোটিপতির ছেলেরাও ঢাকার শহরে এখন এমন টাইপের সার্ভিস দেয়।
Post a Comment